যুবদল নেতার বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ

প্রকাশিত: ১১:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২

উপজেলা প্রতিনিধি

নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চর আমানুল্লাহ ইউনিয়নের যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসানের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মো: বেলায়েত মোল্লার বিরুদ্ধে এই হামলার অভিযোগ করা হয়।

শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত দশটার দিকে এই ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কামরুল হাসানের পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রাতে কিছু দুর্বৃত্তকে সাথে নিয়ে কামরুলের খোঁজে তার বাড়িতে হামলা চালায় বেলায়েত। কামরুল আত্মগোপনে থাকায় তাকে না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যদের ওপর চড়াও হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। হামলার ঘটনায় মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হয় কামরুল বাবা আব্দুর জাহের (৬৫)। এসময় কামরুলের বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। পরে তাদের বাড়িতে পেট্রোল বোমা দিয়ে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত বেলায়েতসহ তার দলবল। প্রতিবেশী লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে কামরুলের পরিবার। এবিষয়ে কামরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ করা হয়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে কামরুলের এক প্রতিবেশী জানান, ‘আমি বাজার থেকে আসার সময় দেখি চেয়ারম্যান বেলায়েতসহ তার লোকজন কামরুলদের বাড়িতে বিভিন্ন হুমকিধামকি দিচ্ছে। পরে আমরা একপ্রকার আর্তনাদ শুনি। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি কামরুলের বাড়িতে আগুন। পরে, আমরা বেশ কয়েকজন এসে আগুন নেভাই।’

হামলার শিকার কামরুলের বাবা আব্দুর জাহের বলেন, ‘বেলায়েত আমার ছেলেটাকে মারতে এসেছিল। তাকে না পেয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র ভেঙেচুরে যায়। শেষে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওরা আমার ছেলেটারে পেলে মেরেই ফেলবে। আমি ওর (বেলায়েত) সুষ্ঠু বিচার চাই।’

প্রতিপক্ষ কামরুল হাসানের বাড়িতে হামলার অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান বেলায়েত মোল্লার সাথে। তিনি বলেন, ‘কামরুলের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ থাকায় আমি সেসব সমাধানের জন্য তার বাড়িতে যাই। তাকে না পেয়ে আমি তার বাবার সাথে কথা বলতে চেয়েছি। কিন্তু, তার বাবা আমাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে। তিনি বয়োবৃদ্ধ মানুষ। আমরা তাকে সম্মান দেখিয়ে চলে আসি। তার বাড়িতে কোনো হামলা চালানো হয়নি।’

কামরুলের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বা আমার কোনো লোকজন কামরুলের বাড়িতে দেয়নি। তারা নিজের ঘরে নিজেরা আগুন দিয়েছে। এখন দোষ দিচ্ছে আমাকে। এসব মিথ্যা কথা।’

প্রসঙ্গত, কামরুল ও বেলায়েতের মধ্যে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও প্রতিহিংসা চলছিল। সম্প্রতি, উপজেলা সংলগ্ন ২ একর ২০ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে এই দ্বন্দ্ব চরম তিক্ততায় রূপ নেয়। পরে এই জমি দখলকে কেন্দ্র করে কামরুল ও বেলায়েতের সমর্থকদের মাঝে বাকবিতন্ডার ঘটনা সংঘর্ষে পরিনত হয়। দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ কামরুলের ওপর হামলে পড়ে গোলাগুলি চালায় বেলায়েতের সমর্থকরা। এই সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ১৪ জন আহত হয়। নিজেদের করা গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় বেলায়েতের ছেলে মো: মাসুদ। পরে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাসুদ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কামরুল, তার ছোট দু’ভাই মোসলে উদ্দিন ও মহিউদ্দিন এবং কৃষ্ণ চক্রবর্তীসহ আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে চরজব্বর থানায় অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করে বেলায়েত।