০৭:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেলেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তিন বিজ্ঞানী

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরি ব্রাঙ্কো, ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমন সাগাগুচি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কীভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকে বা রাখা যায়, সে বিষয়ে তাদের গবেষণাকে স্বীকৃতি দিয়ে সোমবার এ পুরস্কার ঘোষণা করে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট।

স্টকহোম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স’ বিষয়ক আবিষ্কারের জন্য এ তিন বিজ্ঞানীকে এবার চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

নোবেল জুরির ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের আবিষ্কার ইমিউন সিস্টেমের কার্যপ্রণালী এবং কেন সবাই গুরুতর অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত হয় না, তা বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

নোবেল জুরি জানায়, তাদের গবেষণা একটি নতুন ক্ষেত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং ক্যান্সার ও অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। একইসঙ্গে তাদের আবিষ্কার সফল অঙ্গ প্রতিস্থাপনেও সহায়ক হতে পারে।

৭৪ বছর বয়সী সাকাগুচি ১৯৯৫ সালে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার করেন। সে সময় অনেক গবেষক মনে করতেন, ‘সেন্ট্রাল টলারেন্স’ নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষতিকর ইমিউন কোষ থাইমাসে ধ্বংস হওয়ার কারণেই ইমিউন টলারেন্স তৈরি হয়। তবে সাকাগুচি দেখান, ইমিউন সিস্টেম আরো জটিল এবং তিনি এমন এক নতুন শ্রেণির ইমিউন কোষ আবিষ্কার করেন, যা দেহকে অটোইমিউন রোগ থেকে রক্ষা করে।

১৯৬১ সালে জন্মগ্রহণকারী ব্রাঙ্কো এবং ৬৪ বছর বয়সী রামসডেল ২০০১ সালে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেন। তারা ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হন কেন কিছু ইঁদুর বিশেষভাবে অটোইমিউন রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

জুরি জানায়, তারা আবিষ্কার করেছেন ওই ইঁদুরগুলোর জিনে একটি মিউটেশন রয়েছে। তারা সেটির নাম দেন ‘ফক্সপ৩’। তারা দেখান, মানুষের শরীরে এ জিনের সমতুল্য মিউটেশন হলে মারাত্মক অটোইমিউন রোগ ‘আইপিইএক্স’ দেখা দেয়।

দুই বছর পর সাকাগুচি এই আবিষ্কারের সঙ্গে নিজের আবিষ্কারকে যুক্ত করেন।

আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্টকহোমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফের কাছ থেকে তারা নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করবেন। পুরস্কারের মধ্যে থাকছে একটি স্বর্ণপদক, সনদপত্র এবং ১২ লাখ মার্কিন ডলারের চেক।

আগামী সপ্তাহজুড়ে এ বছরের নোবেল পুরস্কারের মৌসুম চলবে। মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞান, বুধবার রসায়ন, বৃহস্পতিবার সাহিত্য, শুক্রবার শান্তি এবং আগামী সোমবার অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

Tag :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেলেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তিন বিজ্ঞানী

চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেলেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তিন বিজ্ঞানী

Update Time : ১১:৫১:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরি ব্রাঙ্কো, ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমন সাগাগুচি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কীভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকে বা রাখা যায়, সে বিষয়ে তাদের গবেষণাকে স্বীকৃতি দিয়ে সোমবার এ পুরস্কার ঘোষণা করে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট।

স্টকহোম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স’ বিষয়ক আবিষ্কারের জন্য এ তিন বিজ্ঞানীকে এবার চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

নোবেল জুরির ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের আবিষ্কার ইমিউন সিস্টেমের কার্যপ্রণালী এবং কেন সবাই গুরুতর অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত হয় না, তা বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

নোবেল জুরি জানায়, তাদের গবেষণা একটি নতুন ক্ষেত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং ক্যান্সার ও অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। একইসঙ্গে তাদের আবিষ্কার সফল অঙ্গ প্রতিস্থাপনেও সহায়ক হতে পারে।

৭৪ বছর বয়সী সাকাগুচি ১৯৯৫ সালে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার করেন। সে সময় অনেক গবেষক মনে করতেন, ‘সেন্ট্রাল টলারেন্স’ নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষতিকর ইমিউন কোষ থাইমাসে ধ্বংস হওয়ার কারণেই ইমিউন টলারেন্স তৈরি হয়। তবে সাকাগুচি দেখান, ইমিউন সিস্টেম আরো জটিল এবং তিনি এমন এক নতুন শ্রেণির ইমিউন কোষ আবিষ্কার করেন, যা দেহকে অটোইমিউন রোগ থেকে রক্ষা করে।

১৯৬১ সালে জন্মগ্রহণকারী ব্রাঙ্কো এবং ৬৪ বছর বয়সী রামসডেল ২০০১ সালে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেন। তারা ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হন কেন কিছু ইঁদুর বিশেষভাবে অটোইমিউন রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

জুরি জানায়, তারা আবিষ্কার করেছেন ওই ইঁদুরগুলোর জিনে একটি মিউটেশন রয়েছে। তারা সেটির নাম দেন ‘ফক্সপ৩’। তারা দেখান, মানুষের শরীরে এ জিনের সমতুল্য মিউটেশন হলে মারাত্মক অটোইমিউন রোগ ‘আইপিইএক্স’ দেখা দেয়।

দুই বছর পর সাকাগুচি এই আবিষ্কারের সঙ্গে নিজের আবিষ্কারকে যুক্ত করেন।

আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্টকহোমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফের কাছ থেকে তারা নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করবেন। পুরস্কারের মধ্যে থাকছে একটি স্বর্ণপদক, সনদপত্র এবং ১২ লাখ মার্কিন ডলারের চেক।

আগামী সপ্তাহজুড়ে এ বছরের নোবেল পুরস্কারের মৌসুম চলবে। মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞান, বুধবার রসায়ন, বৃহস্পতিবার সাহিত্য, শুক্রবার শান্তি এবং আগামী সোমবার অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।